আজ রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মামুনুলের তৃতীয় স্ত্রীর খবর, বোনের খোঁজে ভাইয়ের জিডি

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক তৃতীয় বিয়ের দাবি করেছেন। গাজীপুরের কাপাসিয়ার বাসিন্দা এই নারীর সঙ্গেও এক বছর আগে তার বিয়ে হয়েছে বলে মামুনুল হক ওই নারীর ভাইয়ের কাছে দাবি করেন। ওই নারীর ভাইয়ের নাম শাজাহান সাজু। ওই নারীর ভাইকে শনিবার (১০ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে এ তথ্য জানান মামুনুল হক। শাজাহান সাজু নিজেই এই প্রতিবেদকের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
জানতে চাইলে শাজাহান সাজু গণমাধ্যমকে বলেন, মামুনুল সাহেব আমাকে ডেকে নিয়ে আমার বোনকে বিয়ের কথা জানিয়েছেন। ২০২০ সালে তিনি আমার বোনকে বিয়ে করেন বলে জানান। এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাম্প দেখিয়েছেন। তবে এটি কাবিননামা নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তৃতীয় বিয়ের বিষয়ের মন্তব্য জানতে একাধিকবার মামুনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার মন্তব্য জানা যায়নি। মোবাইলে খুদেবার্তা পাঠানো হলে তিনি রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চান। তৃতীয় বিয়ের বিষয়ে লিখে পাঠানোর পর তিনি আর কোনও মন্তব্য করেননি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে মাস্টার্স করার সময় এই নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় মামুনুল হকের। ওই পরিচয়ের সূত্রে তাদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। আড়াই বছর আগে ওই নারীর ডিভোর্স হয়। এরপর ওই নারীকে একটি মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেন মামুনুল হক। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগের স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার ক্ষেত্রে মামুনুল হক ভূমিকা রেখেছেন। ওই নারীকে ডিভোর্স করিয়ে কেরানীগঞ্জের একটি বাসায় রাখেন। ওই বাসায় মাঝে মধ্যেই যাতায়াত করতেন মামুনুল হক।
জানা গেছে, মামুনুল হকের সোনারগাঁ রিসোর্টকাণ্ডের পর এই নারীকে মামুনুল হক তার বড় বোন দিলরুবার মোহাম্মদপুরের বাসায় রেখেছেন। ওই ঘটনার পর থেকে এই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বলে জানান আত্মীয়-স্বজনরা।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক নারীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হন মামুনুল হক। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে জান্নাত আরাকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন। যদিও এর সপক্ষে কোনও নথিপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই মামুনুল হক তৃতীয় বিয়ের দাবি করলেন।

এদিকে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের দাবি করা ‘তৃতীয় স্ত্রী’র ভাই শাজাহান বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি দায়ের করেছেন। রবিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই জিডি (নং ৮৩৫) দায়ের করা হয়। মোহাম্মদপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একটা জিডি হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
জিডিতে শাজাহান বলেন, গত ৭ এপ্রিল আমার বড় বোনের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। এ সময় আমাকে বলে, সে মোহাম্মদপুরে দিলরুবা নামে এক নারীর বাসায় অবস্থান করছেন।
জিডিতে তিনি আরও বলেন, এদিকে ১০ এপ্রিল মাওলানা মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় ডেকে নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে বলে জানান। তিনি একটি চুক্তিনামা দেখান। কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত আমার বোনের সঙ্গে দেখা বা যোগাযোগ করতে পারিনি। আমার বোন বর্তমানে কোথায় আছে জানতে পারছি না এবং তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় তাকে খুঁজে বের করে অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আইনগত সহায়তা চাচ্ছি।